-:: বাউল ::-
"মিলন হবে কত দিনে
আমার মনের মানুষের
সনে"
মনের মানুষের সাথে মিলন হোক বা না হোক, কথাটা
শুনে যে শব্দটি প্রথম আমাদের তথা আপামর বাঙালির মাথায় আসে তা হল 'বাউল' বা 'বাউল
গান'। বাংলা লোকগানের সবচেয়ে জনপ্রীয় ধারা, যে ধারা আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত তার
নিজগুনে। ২০০৫ সালে ইউনেস্কো বাউল গানকে মানবজাতির ঐতিহ্যের স্মারক রুপে সংরক্ষনের
সিদ্ধান্তও নিয়েছে। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া-পাবনা-যশোর-ফরিদপুর থেকে শুরু করে
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম-নদীয়া-বর্ধমান-বোলপুর-জয়দেবকেন্দুলি পরযন্ত্য বিস্তৃতি লাভ
করেছে বাউল গান।
ছবি - গুগল
ছবি - গুগল
কেউ
বলেন বাউল শব্দটি বায়ু শব্দের সাথে যুক্ত এবং এই বায়ু শব্দের অর্থে যোগশাস্ত্রের
স্নায়বিক শক্তির সঞ্চার বোঝায়। যে সম্প্রদায় দেহের স্নায়বিক শক্তির সঞ্চার সাধন
করবার সাধনা করেন, তারাই বাউল। আবার কারোর মতে, বায়ু মানে শ্বাসপ্রশ্বাস এবং শ্বাসপ্রশ্বাস-এর অর্থ জীবনধারণ এবং তাহা সংরোধ
করে দীর্ঘ জীবনলাভ করবার সাধনা করেন যারা, তারা বাউল। তবে দেহতত্ত্বের সাধনা
দ্বারা পরমাত্মার সন্ধান করাই বাউলদের মূল মন্ত্র। তারা মানুষ, মনের মানুষ, অচিন
পাখি প্রভৃতি প্রতিকের ভাষায় পরমাত্মাকে আভিহিত করে। তিনি মানবদেহে বাস করেন।
পরমাত্মার সাথে মানবাত্মার মিলন সাধন তাদের দেহ সাধনার মূল লক্ষ্য। আধ্যাত্মপ্রেম
তথা ভক্তি দ্বারা এ মিলন সাধন সম্ভব। লালনের ভাষায় - "আপনারে চিনলে পরে যায়
অচেনারে চেনা"।
বাউল
গান ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে এই গানের অন্যতম প্রধান স্রষ্টা লালন শাহ্ - এর
মধ্য দিয়ে। তার জন্মস্থান কষ্টিয়ার ভাড়রা গ্রাম। লালন অনেক শিষ্য -
প্রশিষ্য গ্রহণ করে বাউল সম্প্রদায়কে সংগঠিত করেন। তিনি বাউল গান রচনা করে নিজে
গাইতেন, তার শিষ্যরাও গাইত। পরবর্তীকালে শিষ্য - প্রশিষ্যদের কাছ থেকে লালনের গান
সাংগ্রহ করা হয়েছে। দুদ্দু শাহ্, পাঞ্জু শাহ্, পাগলা কানাই প্রমূখ তার
উল্লেখযোগ্য শিষ্য ছিলেন। তারাও লালনকে অনুসরণ করে বহু বাউল গান রচনা করেছেন।
লালনের গানের সাংখ্যা আনুমানিক দুই থেকে আড়াই হাজার। লালন মানবদেহ ও মানবজীবনকে
সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। তিনি বলেছেন -
"শুনি মানবের উত্তম
কিছু নাই
দেব - দেবতাগণ করে আরাধন
তিনি জাতিভেদেরও ঘোর বিরোধী ছিলেন -
"জাত গেল জাত গেল
চলে
একি আজব কারখানা"
তিনি বলেছেন - "জাত হাতে পেলে পুরাতাম
আগুন দিয়ে"। রবীন্দ্রনাথ বাউলদের জাতি, ধর্ম ও বর্ণভেদমুক্ত জীবনবোধ ও
ধর্ম্যাদর্শের প্রশংসা করে একে মানবধর্ম বলে উল্লেখ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ লালনের
বহু গান সংগ্রহ করে প্রকাশও করেছিলেন। এমনকি তার নিজের লেখা অনেক গানেও বাউল গানের
প্রভাব সুস্পষ্টরূপে লক্ষ্য করা যায়।
বাউল
গানের প্রধান বাদ্যযন্ত্র একতারা। কোনো কোনো বাউল কোমরে বাঁয়া বাঁধে। ডান হাতে
একতারা এবং বাম হাতে বাঁয়া বাজিয়ে বাউলরা একা অথবা দলবদ্ধভাবে গান - নাচ করে।
এছাড়া বাউল গানের উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র হল - খমক, দোতারা, খোল, ডুগী প্রভৃতি।
ছবি - গুগল
লালন
ছারাও আরও কয়েকজন উল্লেখযোগ্য বাউল কবি হলেন - জগম্মোহন গোঁসাই, সিরাজ সাঁই, হাসন
রাজা, দ্বিজদাস, মুকুন্দ দাস, শাহ্ আব্দুল করিম, কবি জয়দেব, ভবা পাগলা, জালাল
খাঁ, রশিদ উদ্দিন, হরিচরণ আচার্য, পূর্ণদাস বাউল প্রমূখ।
তথ্যসূত্র ঃ- উইকিপিডিয়া
বাউল গানের কয়েকটি নমুনা ঃ- https://www.youtube.com/watch?v=_tEV7aph-mU
https://www.youtube.com/watch?v=4ZX4IwwVTLw
https://www.youtube.com/watch?v=RGy4MhpMPKE
https://www.youtube.com/watch?v=FBpFTy4BO_Q
https://www.youtube.com/watch?v=UOSm81--rLc
আরও পড়ুন, আরও জানুন ঃ-
কবিগান - https://satyakikarmakar.blogspot.com/2018/12/blog-post_28.html
ভাদু - https://satyakikarmakar.blogspot.com/2019/01/blog-post.html
তথ্যসূত্র ঃ- উইকিপিডিয়া
বাউল গানের কয়েকটি নমুনা ঃ- https://www.youtube.com/watch?v=_tEV7aph-mU
https://www.youtube.com/watch?v=4ZX4IwwVTLw
https://www.youtube.com/watch?v=RGy4MhpMPKE
https://www.youtube.com/watch?v=FBpFTy4BO_Q
https://www.youtube.com/watch?v=UOSm81--rLc
আরও পড়ুন, আরও জানুন ঃ-
কবিগান - https://satyakikarmakar.blogspot.com/2018/12/blog-post_28.html
ভাদু - https://satyakikarmakar.blogspot.com/2019/01/blog-post.html




No comments:
Post a Comment